পালাতে গিয়ে নৌকা ডুবে ১৭ রোহিঙ্গা নিহত, নিখোঁজ অনেকে

প্রকাশঃ আগস্ট ৩১, ২০১৭ সময়ঃ ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি :

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মধ্যে জীবন বাঁচাতে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশের সময় রোহিঙ্গা নাগরিকদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. নুরুল আমিন আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাটি গতকাল রাতে ডুবেছে। আজ সকালে স্থানীয়রা নাফ নদীর কূলে ১৭টি লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন।

ঘটনাস্থলে এখনো পুলিশ এসে পৌঁছায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, নৌকাটিতে ২৫ থেকে ৩০ জন লোক ছিল।

এর আগে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা নাফ নদীতে ডুবে যায়। পরদিন চারটি লাশ উদ্ধার করা হয়।

মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।

এরপর ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তাকর্মীদের সংঘর্ষে প্রায় একশজন নিহত হন। এর মধ্যে ১২ নিরাপত্তাকর্মী ও বাকিদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করেছে মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতার কার্যালয়। এর পর থেকেই হাজার হাজার মানুষ মিয়ানমার থেকে নদী, সমুদ্র ও স্থলপথে বাংলাদেশে আসা শুরু করে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যদিও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সীমান্ত দিয়ে কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

এর আগে গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য মারা যান। অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনা ঘটে।

জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গ্রামে আগুন দিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এক পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এর আগে ২০১২ সালের জুনেও মিয়ানমারে সম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় সরকার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে শক্ত অবস্থান নেয়। যার ফলে ওই সময়ে সাড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা পুশব্যাক করা হয়।

প্রতিক্ষণ/এডি/রন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G